আফগান রুপকথায় ডুবল ইংল্যান্ডের তরী

- আপডেট সময় : ০৫:৪৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
আগের ম্যাচে ৩৫১ রান করার ঘটনা তো আছেই, সাথে ওয়ানডেতে নিয়মিত ৩০০ প্লাস করার কীর্তি তো আছে। সেই কারণেই হয়ত ইংল্যান্ডকে বড় টার্গেট দেওয়ার লক্ষ্যেই পুরো ইনিংস জুড়েই আগ্রাসন, একাগ্রতার মিশেলে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করলেন ইব্রাহিম জাদরান। সাথে অন্যদের যথাসাধ্য অবদানে আফগানিস্তান পেয়ে গেল বিশাল এক স্কোর। রান তাড়ায় প্রথম তিন ব্যাটার ব্যর্থ হলেও দাঁড়িয়ে গেলেন জো রুট। তবে আফগান রুপকথার সামনে হার মানতে হল তাকে ও তার দলকেও।
লাহোরে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে আফগানিস্তান জিতেছে ৮ রানে। আগে ব্যাটিং করা আফগানিস্তান করেছিল ৭ উইকেটে ৩২৫। রুটের সেঞ্চুরির পরও ইংল্যান্ড থেমেছে ৪৯.৫ ওভারে ৩১৭ রানে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটি ইংল্যান্ডের প্রথম জয়।
এই হারের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল ইংল্যান্ডের।
ইংল্যান্ডের শুরুটাই ছিল আগ্রাসী। ইনিংসের প্রথম বলে ফজলহক ফারুকিকে চার মারেন ফিল সল্ট। ওই ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে আরেকটি বাউন্ডারি। তবে আক্রমণে এসেই তাকে চমকে দেন আজমতউল্লাহ ওমারজাই। লেন্থ ডেলিভারিতে বোল্ড করেন মাত্র ১২ রানে।
নিজের করা প্রথম ওভারে সাফল্য পান মোহাম্মদ নবিও। তার প্রথম বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জ্যামি স্মিথ। এই ধাক্কা সামলে এরপর বেন ডাকেট ও রুট মিলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে।
ফারুকির বলে ৩০ রানে থাকা অবস্থায় ফারুকির বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন ডাকেট। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার। রশিদ খানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে যান আর মাত্র ৮ রান করতেই। ৩ উইকেটে ইংল্যান্ডের রান তখন মাত্র ৯৮ রান।
পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা ছিল হ্যারি ব্রুকের ব্যাটে। তবে তরুণ এই ব্যাটার পারেননি বেশিদূর যেতে। নবির বলে তাকে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার সম্ভাবনাময় ইনিংস। ২১ বলে তার আগে করেন ২৫।
এরপর আসে ইংল্যান্ডের সেরা জুটিটি। রুটের সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত রান তুলে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ বাড়ান জস বাটলার। তবে ত্রিশ থেকে চল্লিশ ওভারের মাঝে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচে ফিরে আসে আফগানিস্তান। ভালোভাবেই ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া বাটলার আউট হন সেই চাপ সরাতে গিয়েই।
ওমারজাইকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাটলার (৩৮ রান) ক্যাচ তুলে দেন ডিপ স্কয়ার লেগে। প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে দলকে হতাশ করেন তিনি। গুলবাদিন নাইবের বলে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ডেকে আনেন বিপদ।
তবে একপ্রান্ত আগলে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ধরে রাখেন রুট। স্থিরতার সাথে রান-রেটের হিসাব মিলিয়ে করেন চমৎকার ব্যাটিং।
৪২তম ওভারে গিয়ে সেঞ্চুরির দেখা পান রুট, যা প্রায় পাঁচ বছর পর এই ফরম্যাটে তার প্রথম ওয়ানডে শতক। ফারুকিকে এক ওভারে দুই চার মেরে ইংল্যান্ড শিবিরে আশা জাগান জ্যামি ওভারটন। ফারুকির পরের ওভারে ছক্কা মেরে জয়ের সমীকরণ আরেকটু সহজ করেন রুট।
তবে আরও একবার আক্রমণে এসেই আঘাত হানেন ওমারজাই। অফস্ট্যাম্পের বাইরে বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় রুটের ইনিংস। তবে তার খেলে যান ১১১ বলে ১২০ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস।
এরপরও লড়াই চালাচ্ছিলেন ওভারটন একাই। তবে ৪৮তম ওভারে একটি চার মারার পর তাকে নিজের চতুর্থ শিকার বানিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন সেই ওমারজাই।
পরের ওভারে ২ চারে ১৪ করা আর্চারকেও ফিরিয়ে আফগানিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা জোড়াল করেন ফারুকি। শেষ ওভারে দরকার পড়ে ১৩ রানের, যা আর মেলাতে পারেননি মার্ক উড ও আদিল রশিদরা।