সালিসে তরুণকে ন্যাড়া, আত্মহত্যাচেষ্টার ৪ মাস পর মৃত্যু

- আপডেট সময় : ০২:২৯:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় সালিসে চুল কেটে ন্যাড়া করার অপমান সহ্য করতে না পেরে এনামুল খান (১৯) আত্মহত্যাচেষ্টা করেছিলেন। চার মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল এই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) দিবাগত রাত ৮টায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়েছে। ওই রাতেই পুলিশ লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে পাঠায়।
জানা যায়, চার মাস আগে প্রতিবেশী টুকু খানের একটি বকনা বাছুর এনামুলের চলন্ত মোটরসাইকেলের নিচে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিস বৈঠক বসে তাকে মারধর করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার সরোয়ার হোসেন মৃধা সবার সামনে তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেন। এ অপমান সইতে না পেরে ওই যুবক গত ১৪ নভেম্বর সকাল ১১টায় নিজ বাড়ির একটি দোচালা ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন।
এ সময় স্বজনরা টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে যুবককে উদ্ধার করেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তিন মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়। সুস্থতা ফিরে না এলে তাকে বাড়িতে রেখে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় প্রায় চার মাস আগে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা হয়েছিল।
এ মামলার দুই আসামিরা হলেন ইউপি সদস্য সরোয়ার হোসেন মৃধা (৫৫) ও মৃত যুবকের প্রতিবেশী টুকু খান (৪৮)। এরা সবাই জমিনে মুক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে। মৃতের বাবা আইয়ুব খান বলেন, ‘গ্রাম্য মাতুব্বররা সালিস বৈঠকের নামে আমার পরিবারটি ধ্বংস করে দিছেন। ছেলেকে তিন মাস আইসিইউতে রেখে সাড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ করার পরও বাঁচাতে পারলাম না। ইউপি সদস্য সরোয়ার হোসেন মৃধা আমাদের সামনে ভরা মজলিসে ছেলেকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দিয়েছিলেন।
আমার ছেলে এ অপমান সইতে পারেনি, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’ চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রোজিউল্লাহ খান বলেন, এ ঘটনায় মামলা তো আগেই হয়েছে। এখন শুধু মেডিক্যাল রিপোর্ট ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলার গতিবিধি নির্ণয় হবে।