জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবগঠিত ২১ নং (শেখ রাসেল) হল ও তাজউদ্দীন হল থেকে রবীন্দ্র চত্ত্বরে আসার রাস্তা চলতি বর্ষায় কর্দমাক্ত ও খাদ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

দীর্ঘদিন থেকে এ রাস্তার মেরামতের দাবি জানানোর পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় হলের শিক্ষার্থীরা আগামী ২২ জু মধ্যে রানেরস্তার কাজ শুরু করার আল্টিমেটাম দেন।

বুধবার (১৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ তম আবর্তনের ইতিহাস বিভাগের ও ২১ নং হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. শাকিল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। চলাচলের অনুপযোগী উক্ত রাস্তার ছবিসহ ওই পোস্টে তিনি বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থীর যাওয়া আসা করতে হয়।

আমি মাননীয় ভিসি স্যার, প্রো -ভিসি স্যার সহ প্রশাসনকে বহুবার এই রাস্তার ব্যাপারে জানিয়েছি। তাঁরা বারবার কেবল আশ্বাস দিয়ে গেছেন।” তিনি আরও লিখেন, “আগামী ৩ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২২ জুনের মধ্যে যদি এই রাস্তার কাজ না হয় তাহলে আমরা দুই হলের (২১ নং হল ও শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ হল) শিক্ষার্থীরা মিলে কঠোর কর্মসূচি দেবো।

” ২১ নং হল ও শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলে এখনো গ্যাস সংযোগ নেই। খাবারের সু-ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন কাজে বের হতে হয়, নিজেদের ক্লাসে যেতে হয়।

এতে করে ছোট ও সংক্ষিপ্ত রাস্তা ছেড়ে জেনারেটর বাজার হয়ে শহিদ সালাম বরকত হলের সামনে দিয়ে ঘুরে যেতে হয় যা আমাদের জন্য এই বর্ষায় অত্যন্ত কষ্টদায়ক। আমরা চাই প্রশাসন থেকে দ্রুতই এই রাস্তার কাজ শুরুর উদ্যোগ নিক, নতুবা আমরা দুই হলের শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

এদিকে চলতি বর্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও বেশকিছু রাস্তায় ভঙ্গুর চিত্র ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে প্রীতিলতা হল থেকে টারজান পয়েন্ট, শহিদ সালাম বরকত হল সংলগ্ন রাস্তা, কামালউদ্দিন হল সংলগ্ন রাস্তা, ভিসির বাসভবন থেকে বিশমাইল মোড় পর্যন্ত রাস্তার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

তবে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা সংলগ্ন রাস্তা, গেরুয়া ঢাল সংলগ্ন রাস্তা, রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তা, জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনের রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ভঙ্গুর চিত্র দৃশ্যমান। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত চাইলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে প্রীতিলতা হল থেকে টারজানসহ বেশ কয়েক জায়গায় কাজ শুরু করেছি। আমাদের একটু সময় দিতে হবে।

” তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বাজেট আসার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দফায় এটি বাতিল হয়ে যায়। এই প্রকল্প পেলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার সাথে ফুটপাত, সাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা রাস্তাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন এর আওতায় ছিল।

তবে এটি না আসলেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু ফান্ড থেকে জরুরি চলাচলের অনুপযোগী রাস্তাসমূহ মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি এবং এর অধিকাংশই ইতোমধ্যে শেষ হতে চলেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ডের উদ্যোগে চালু করা এই কাজের আওতায় রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তাটি রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না, এটি নেই। আমরা নিজস্ব ফান্ডে শুধু প্রীতিলতা হল থেকে টারজান পয়েন্ট, শহীদ সালাম বরকত হল সংলগ্ন রাস্তা, কামালউদ্দিন হল সংলগ্ন রাস্তা এবং ভিসি বাসভবন থেকে বিশমাইলের রাস্তাটির কাজই করবো।

” রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তাটির কাজ কবে নাগাদ শুরু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন প্রকল্প আসলে এটার কাজ হবে। এটিসহ তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য রাস্তাঘাট গুলোরও যথেষ্ট উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে বলে আশা রাখি। তবুও আমরা পরবর্তী সিন্ডিকেটে এই বিষয়ে আলোকপাত করবো।

উল্লেখ্য, রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় উক্ত দুই হলের প্রায় দুই হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী ও অন্যান্য পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।