এবার মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান

- আপডেট সময় : ০২:২৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে জড়ালে চুপ করে থাকবে না তেহরান—এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ইরান।
‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নিলে প্রথমে ইরাকে থাকা মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাবে ইরান। পরবর্তীতে অন্যান্য আরব দেশে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোও তাদের টার্গেটে থাকবে।
এই প্রস্তুতির পেছনে মূলত উদ্বেগজনক এক ঘটনার পটভূমি রয়েছে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের অনুরোধে ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে সমর্থনের চিন্তা করছেন। ইরানের বিশ্বাস, যদি যুক্তরাষ্ট্র হামলায় জড়ায়, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্রটি ইরানের এক পাহাড়ি এলাকায় ভূগর্ভস্থ অবস্থানে অবস্থিত। ইসরায়েল এটি ধ্বংস করতে চায়, কিন্তু এর মতো শক্তিশালী বোমা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি।
এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে—যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিকভাবে জড়ায়, তাহলে তারা কেবল আঞ্চলিক মার্কিন ঘাঁটি নয়, বরং হরমুজ প্রণালীতেও প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। সেখানে মাইন পেতে দিলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। ফলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের সরবরাহে বিপর্যয় ও দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরাও পুনরায় লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানগুলোকে আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এগোতে দেখা গেছে, যা ওয়াশিংটনের তরফে যুদ্ধ প্রস্তুতিরই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
‘দ্য টেলিগ্রাফ’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণের ব্যাপারে আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে তা কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।