ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জারুল ফুলে ছেয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মুনান হাওলাদার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫ ২০০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক মিরর টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেন এখন এক স্বপ্নলোক—চারদিকে জারুল ফুলের বেগুনি রঙে ঢেকে গেছে প্রিয় এই প্রাঙ্গণ। গ্রীষ্মের খররোদ আর ধুলোমাখা বাতাসের মাঝেও প্রকৃতি তার আপন ছন্দে লিখে চলেছে রঙের কবিতা। ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণ যেন বলে, “এ যেন জারুলের সময়”।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তার ধারে, একাডেমিক ভবনের পাশে, আবাসিক হলের সামনে—সবখানেই যেন জারুলের রঙিন ছোঁয়া। বিশেষ করে চারুকলা থেকে ফ্লাইওভার সংলগ্ন রাস্তার ধারে এবং নব নির্মানাধীন শেখ হাসিনা হল সংলগ্ন রাস্তার ধারে এই ফুলের আধিক্য নজরকাঁড়া।

 

উঁচু ডালে থোকা থোকা বেগুনি ফুল, নীচে ছড়িয়ে থাকা ফুলঝরা পথ- দৃশ্যটি যেন নিস্তব্ধ এক চিত্রকর্ম। বাতাসে ফুলের নরম ঘ্রাণ আর পাপড়ির মৃদু ঝরে পড়া যেন নিঃশব্দে বলে চলে প্রকৃতির কথা। শুধু সৌন্দর্যবর্ধন নয় এর রয়েছে নানা ভেষজ গুন। শিক্ষার্থীদের হাসি, আড্ডা আর ক্যামেরার ক্লিকে মুখর এই ক্যাম্পাসে এখন যোগ হয়েছে এক অনির্বচনীয় সৌন্দর্য।

 

কেউ হাঁটছে প্রেমিকের হাত ধরে, কেউ বইয়ের পাতা ছেড়ে প্রকৃতির রঙে হারিয়ে যাচ্ছে, কেউ আবার ক্যামেরাবন্দি করছে এই অস্থায়ী সৌন্দর্য।  কথা হয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে নানা ধরনের ফুল আছে।

 

কিন্তু তার মধ্যে এই ফুল আসে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, যা আমাদের টানে তার অপরুপ সৌন্দর্যে। এই সময়টায় মনে হয়, আমরা কোনো পরাবাস্তব জগতে বসবাস করছি যেখানে কেবল শান্তি, সৌন্দর্য আর ভালোবাসার গল্প।

 

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ বলেন, জারুল গাছ আমাদের দেশের একটি সুপরিচিত শোভাবর্ধক ও ঔষধিগুণে ভরপুর বৃক্ষ। গ্রীষ্মের প্রখর রোদে জারুলের বেগুনি রঙের ফুল আমাদের দৃষ্টিকে আকর্ষণ করে। এটি অনেক বছরের পুরনো গাছ  এবং এটি আমাদের দেশীয় গাছ।

 

সাধারণত গ্রীষ্মের শুরু থেকে শরৎ এর শুরু পর্যন্ত এই ফুল ফুটতে দেখা যায়, অর্থাৎ এপ্রিল-জুন মাস পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, গাছটি ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এটি অনেক পানিপ্রিয় যার কারনে এটি সাধারণত নিচু ও স্যাঁতস্যাঁতে  জায়গায় লাগানো হয়।

 

এটি আগে কৃষকের লাঙ্গল, কাঠের ঘরে দরজা-জানালায় এবং বর্তমান সময়ে অনেক আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।সব মিলিয়ে জারুল গাছ শুধু শোভা নয়, এর রয়েছে অনেক ঔষধি গুন (যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, জ্বর,সর্দি, কাশি উপশমে)। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রঙিন প্রান্তর যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতির সৌন্দর্য খুবই কাছেই থাকে, শুধু তাকিয়ে দেখার মন থাকতে হয়। 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জারুল ফুলে ছেয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট সময় : ০৫:১৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেন এখন এক স্বপ্নলোক—চারদিকে জারুল ফুলের বেগুনি রঙে ঢেকে গেছে প্রিয় এই প্রাঙ্গণ। গ্রীষ্মের খররোদ আর ধুলোমাখা বাতাসের মাঝেও প্রকৃতি তার আপন ছন্দে লিখে চলেছে রঙের কবিতা। ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণ যেন বলে, “এ যেন জারুলের সময়”।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তার ধারে, একাডেমিক ভবনের পাশে, আবাসিক হলের সামনে—সবখানেই যেন জারুলের রঙিন ছোঁয়া। বিশেষ করে চারুকলা থেকে ফ্লাইওভার সংলগ্ন রাস্তার ধারে এবং নব নির্মানাধীন শেখ হাসিনা হল সংলগ্ন রাস্তার ধারে এই ফুলের আধিক্য নজরকাঁড়া।

 

উঁচু ডালে থোকা থোকা বেগুনি ফুল, নীচে ছড়িয়ে থাকা ফুলঝরা পথ- দৃশ্যটি যেন নিস্তব্ধ এক চিত্রকর্ম। বাতাসে ফুলের নরম ঘ্রাণ আর পাপড়ির মৃদু ঝরে পড়া যেন নিঃশব্দে বলে চলে প্রকৃতির কথা। শুধু সৌন্দর্যবর্ধন নয় এর রয়েছে নানা ভেষজ গুন। শিক্ষার্থীদের হাসি, আড্ডা আর ক্যামেরার ক্লিকে মুখর এই ক্যাম্পাসে এখন যোগ হয়েছে এক অনির্বচনীয় সৌন্দর্য।

 

কেউ হাঁটছে প্রেমিকের হাত ধরে, কেউ বইয়ের পাতা ছেড়ে প্রকৃতির রঙে হারিয়ে যাচ্ছে, কেউ আবার ক্যামেরাবন্দি করছে এই অস্থায়ী সৌন্দর্য।  কথা হয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে নানা ধরনের ফুল আছে।

 

কিন্তু তার মধ্যে এই ফুল আসে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, যা আমাদের টানে তার অপরুপ সৌন্দর্যে। এই সময়টায় মনে হয়, আমরা কোনো পরাবাস্তব জগতে বসবাস করছি যেখানে কেবল শান্তি, সৌন্দর্য আর ভালোবাসার গল্প।

 

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ বলেন, জারুল গাছ আমাদের দেশের একটি সুপরিচিত শোভাবর্ধক ও ঔষধিগুণে ভরপুর বৃক্ষ। গ্রীষ্মের প্রখর রোদে জারুলের বেগুনি রঙের ফুল আমাদের দৃষ্টিকে আকর্ষণ করে। এটি অনেক বছরের পুরনো গাছ  এবং এটি আমাদের দেশীয় গাছ।

 

সাধারণত গ্রীষ্মের শুরু থেকে শরৎ এর শুরু পর্যন্ত এই ফুল ফুটতে দেখা যায়, অর্থাৎ এপ্রিল-জুন মাস পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, গাছটি ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এটি অনেক পানিপ্রিয় যার কারনে এটি সাধারণত নিচু ও স্যাঁতস্যাঁতে  জায়গায় লাগানো হয়।

 

এটি আগে কৃষকের লাঙ্গল, কাঠের ঘরে দরজা-জানালায় এবং বর্তমান সময়ে অনেক আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।সব মিলিয়ে জারুল গাছ শুধু শোভা নয়, এর রয়েছে অনেক ঔষধি গুন (যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, জ্বর,সর্দি, কাশি উপশমে)। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রঙিন প্রান্তর যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতির সৌন্দর্য খুবই কাছেই থাকে, শুধু তাকিয়ে দেখার মন থাকতে হয়।