রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণেরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান তারা। 

বৃহস্পতিবার (১লা মে) বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্যারের প্রথম পরিচয় তিনি আমাদের জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধা। হামলাকারীরা বলতে চাই,  মাসউদ স্যারসহ জুলাই আগস্টের সম্মুখ সারির শিক্ষকরা একদিনে তৈরি হয়নাই। তাঁরা বিগত কয়েক দশকে রাজপথে থেকে অধিকার আদায়ে লড়াই করার সৈনিক।

যদি তাদের উপরে হামলা করার কোনো ষড়যন্ত্রের চিন্তা করা হয় তাহলে তাদের হুশিয়ার করে বলতে চাই হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে  যেভাবে বিতারিত করা হয়েছে তেমনি তোমাদেরকেও সমূলে উদঘাটন করা হবে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে আর কোনো আধিপত্যবাদের রাজনীতি করতে দেওয়া হবেনা।

আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে এই হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।  আরেক সাবেক সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মিশু বলেন,মাসুদ স্যার একই সাথে নানা পরিচয় বহন করেন। একই সাথে তিনি একজন শিক্ষক এবং  একইসাথে তিনি একজন জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের একজন অগ্রসৈনিক।তার বাসায় এবং তার পরিবারকে লক্ষ্য করে যে সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক।

তারা যে রাজনৈতিক দলের পরিচয় বহন করুক না কেন তারা সন্ত্রাসী। আমরা জুলাই সহযোদ্ধাদের ভুলে যাচ্ছি, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল তাদেরকে বাঁচাতে হবে আমাদের। আজ মাসুদ স্যার, পরবর্তী লক্ষ্য কে? আমাদের জুলাইয়ের চেতনাকে বাঁচাতে হবে।জুলাইয়ে যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ আবার স্বাধীন হয়েছিল, আমাদের সেই স্বপ্নকে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সমাবেশে একাত্মতা পোষণ করে রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, গতকাল রাতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্যারের বাসায় ককটেল নিক্ষেপ বা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।

তিনি বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে রুয়া ও রাকসু নির্বাচনের বাস্তবায়নের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং দোষারোপের সুযোগ নিতে একটি কুচক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে একজন রুয়া প্রার্থীর বাসায় হামলা চালিয়েছে, যাতে করে রুয়া ও রাকসু নির্বাচন বানচাল করা যায়। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই আগের যুগের অপসংস্কৃতি আর চলবে না।

এটা আধুনিক যুগ, এখানে এমনভাবে নির্বাচন ব্যাহত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই সফল হবে না। 

শিবির সভাপতি আরও বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি রাকসুসহ অন্যান্য নির্বাচন বাস্তবায়নে প্রশাসন যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা সফল করার জন্য আমরা প্রয়োজন হলে রক্তও দেবো, ঠিক যেমনটি হয়েছিল ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবে। মাসুদ স্যারের বাসায় যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। 

এসময় রাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও সাবেক সমন্বয়কসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।  উল্লেখ্য গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসায় চার-পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।