ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমন্বয়ককে সুবিধা দিতে কুবির আইন বিভাগের পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্ব

আব্দুল্লাহ আল মামুন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ ১৪৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহিত

দৈনিক মিরর টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের চৌদ্দ মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখন পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এক সমন্বয়ককে সুবিধা দিতে বিভাগটি ইচ্ছাকৃতভাবে ফল প্রকাশে বিলম্ব করছে।

 

জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে মাস্টার্স অব ল (এলএল.এম) ২য় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৯ মার্চ ২০২৪ তারিখে কম্পারেটিভ কনস্টিটিউশনাল ল (ল-৫২০) পরীক্ষার মাধ্যমে এবং শেষ হয় ২৮ মার্চ ‘ল অব ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন’ (ল-৫২৫) পরীক্ষার মাধ্যমে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রায় চৌদ্দ মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।

 

অভিযোগ এসেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মো. সাকিব হোসাইনকে সুবিধা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহপাঠী জানান, “ইচ্ছাকৃতভাবে সমন্বয়ক মো. সাকিব হোসাইনকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে। তিনি শিক্ষকদের অনুরোধ করেছেন তাকে ফেল করাতে, যাতে ক্যাম্পাসে থেকে রাজনীতি করতে পারেন এবং শিক্ষকদের রাজনৈতিক সুবিধা দিতে পারেন। এছাড়াও রেজাল্ট হলে তাকে হল ত্যাগ করতে হবে। হলে থাকার সুবিধার্থেই এমন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন।”

 

অবৈধ সুবিধা গ্রহণ ও শিক্ষকদের রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ফলাফল আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমন্বয়ক মো. সাকিব হোসাইনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মু. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “যে অভিযোগটি এসেছে তা মিথ্যা। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ফলাফল আটকে রাখিনি।”

 

পরীক্ষা শেষ হওয়ার চৌদ্দ মাসেও ফল প্রকাশ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা থিসিস ডিফেন্সের জন্য আমাদের কাছে সময় চেয়েছিল। এছাড়াও এক্সটার্নাল শিক্ষকের কাছে খাতা যাওয়ার কারণে এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণে দেরি হয়েছে। আমরা রেজাল্টগুলো পেয়ে তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়েছি।”

 

বিভাগীয় চেয়ারম্যান মু. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, “ওই সময়ের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ছিলেন পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমি সম্প্রতি বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর মিটিংয়ে ফলাফলের বিষয়টি আমি উত্থাপন করেছি।” অভিযোগ সম্পর্কিত কোনো তথ্য তার কাছে নেই বলেও জানান তিনি।

 

এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, “বিষয়গুলো আমাকে দেখে জানাতে হবে। আপনি অন ‘ডে’ তে আসুন আপনাকে জানাতে পারবো। এখন জানাতে পারছি না।

 

উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাসুদা কামাল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগগুলোতে যথাসময়ে পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। আইন বিভাগের ফলাফল প্রকাশ না হওয়ার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। যেহেতু এখন জেনেছি, অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সমন্বয়ককে সুবিধা দিতে কুবির আইন বিভাগের পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্ব

আপডেট সময় : ০৫:৪৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের চৌদ্দ মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখন পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এক সমন্বয়ককে সুবিধা দিতে বিভাগটি ইচ্ছাকৃতভাবে ফল প্রকাশে বিলম্ব করছে।

 

জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে মাস্টার্স অব ল (এলএল.এম) ২য় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৯ মার্চ ২০২৪ তারিখে কম্পারেটিভ কনস্টিটিউশনাল ল (ল-৫২০) পরীক্ষার মাধ্যমে এবং শেষ হয় ২৮ মার্চ ‘ল অব ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন’ (ল-৫২৫) পরীক্ষার মাধ্যমে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রায় চৌদ্দ মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।

 

অভিযোগ এসেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মো. সাকিব হোসাইনকে সুবিধা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহপাঠী জানান, “ইচ্ছাকৃতভাবে সমন্বয়ক মো. সাকিব হোসাইনকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে। তিনি শিক্ষকদের অনুরোধ করেছেন তাকে ফেল করাতে, যাতে ক্যাম্পাসে থেকে রাজনীতি করতে পারেন এবং শিক্ষকদের রাজনৈতিক সুবিধা দিতে পারেন। এছাড়াও রেজাল্ট হলে তাকে হল ত্যাগ করতে হবে। হলে থাকার সুবিধার্থেই এমন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন।”

 

অবৈধ সুবিধা গ্রহণ ও শিক্ষকদের রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ফলাফল আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমন্বয়ক মো. সাকিব হোসাইনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মু. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “যে অভিযোগটি এসেছে তা মিথ্যা। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ফলাফল আটকে রাখিনি।”

 

পরীক্ষা শেষ হওয়ার চৌদ্দ মাসেও ফল প্রকাশ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা থিসিস ডিফেন্সের জন্য আমাদের কাছে সময় চেয়েছিল। এছাড়াও এক্সটার্নাল শিক্ষকের কাছে খাতা যাওয়ার কারণে এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণে দেরি হয়েছে। আমরা রেজাল্টগুলো পেয়ে তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়েছি।”

 

বিভাগীয় চেয়ারম্যান মু. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, “ওই সময়ের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ছিলেন পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমি সম্প্রতি বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর মিটিংয়ে ফলাফলের বিষয়টি আমি উত্থাপন করেছি।” অভিযোগ সম্পর্কিত কোনো তথ্য তার কাছে নেই বলেও জানান তিনি।

 

এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, “বিষয়গুলো আমাকে দেখে জানাতে হবে। আপনি অন ‘ডে’ তে আসুন আপনাকে জানাতে পারবো। এখন জানাতে পারছি না।

 

উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাসুদা কামাল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগগুলোতে যথাসময়ে পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। আইন বিভাগের ফলাফল প্রকাশ না হওয়ার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। যেহেতু এখন জেনেছি, অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”