জামালপুরে মসজিদের রাস্তা দখল ঘিরে উত্তেজনা: লাশ দাফনে বাধা

- আপডেট সময় : ০৪:০০:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫ ২৩ বার পড়া হয়েছে
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মসজিদের যাতায়াত রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের সামাজিক বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। এর জের ধরে এক মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) সন্ধায় সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিকাশ চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আজ সকালে উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর বেপারীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণপুর বেপারীপাড়া নূরানী জামে মসজিদ কেন্দ্র করে প্রায় এক বছর ধরে সমাজের দুই পক্ষের মধ্যে চরম মতবিরোধ চলছে। ওই মসজিদে যাতায়াতের জন্য সরকারি রেকর্ডভুক্ত একটি ১৭২ ফুট দীর্ঘ রাস্তা রয়েছে, যার পৈত্রিক মালিকানা মৃত ইয়ার হোসেনের ছেলে মো. ওয়াজ করুনীর নামে রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রভাবশালী একটি পক্ষ—মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে লাল মাহমুদ ও তার অনুসারীরা—এক বছর আগে সেই রাস্তা জবরদখল করে নেয়। ফলে এলাকাবাসীর প্রায় ২০০ জন মুসল্লির মসজিদে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি শুরু হয়।
বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করে গত বৃহস্পতিবার ওয়াজ করুনীর ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন ইমামুল হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলে। জানাজার পর পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে সমাজের কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় লাল মাহমুদ, হবিবুর রহমান, শামস উদ্দিন, নাজমুল, মুস্তাজ আলী, হাসেম, হারুন, শাহিন মিয়া, রাজা মিয়া ও আবু বক্করসহ একটি দল লাশ দাফনে বাধা প্রদান করে।
এতে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের কঠোর চাপের মুখে অবশেষে গোরস্থানে দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
ওয়াজ করুনী অভিযোগ করে বলেন, “মসজিদের ইমামের দেওয়া সুদ-ঘুষবিরোধী ওয়াজের জেরে সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। ১৫০টি পরিবারের মধ্যে ১২০টি পরিবার একদিকে, বাকি ৩০টি পরিবার অন্যদিকে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আমাদের জমির ওপর দিয়ে মসজিদের রাস্তা দিয়েছিলাম। এখন সেই পথও জবরদখলে চলে গেছে। এমনকি ভাইয়ের জানাজা ও দাফনেও বাধা দিয়েছে প্রতিপক্ষ।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত লাল মাহমুদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা কোনো রাস্তা দখল করিনি। দাফনে কোনো ধরনের বাধাও দেইনি। লাশ যথাযথভাবেই দাফন হয়েছে।”
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।