জামায়াত আমীরের প্রতিশ্রুতি: প্রতিমাসে অর্থ সহায়তা পাচ্ছেন বাবা-মা হারানো ছোট্ট দিপু

- আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫ ০ বার পড়া হয়েছে
পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় বাবা-মা হারানো ছোট্ট দিপু রায়ের লেখাপড়া এবং যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চলতি মাস থেকে দিপুর পরিবারকে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (২৪ মার্চ) বিকেলে দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙা ইউনিয়নের ছত্রশিকারপুর হাতিডুবা গ্রামে দিপুর বাড়িতে গিয়ে তার হাতে প্রথম মাসের টাকা তুলে দেন পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাওলানা ইকবাল হোসাইন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা সফিউল্লাহ সুফি, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পঞ্চগড় জেলা সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়া, বোদা উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল বাসেত, দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম, সেক্রেটারি বেলাল হোসেন, দিপুর বড়ভাই দিপন রায় ও পরিতোষ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর করতোয়া নদীতে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় তিন বছরের দিপু তার বাবা-মাকে হারায়। দিপু সেই সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও তার মা রূপালী রানী ও বাবা ভূপেন্দ্রনাথ রায়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বড়ভাই দীপন ও পরিতোষই এখন তার অভিভাবক।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় ৫ বছর বয়সী দিপুর লেখাপড়াসহ যাবতীয় দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াতের আমীর জনসভায় বক্তব্যে বলেছিলেন, নৌকাডুবিতে ৭২ জনের প্রাণহানি হয়েছিলো। আমরা আমাদের সাধ্যমত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতার চেষ্টা করেছিলাম। তখন এই ছোট্ট দিপুকে কোলে নেয়ার সুযোগ হয়েছিলো। আমরা চেয়েছিলাম সে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার দায়িত্ব আমরা নিবো।
পরে আমি দেখলাম এই এলাকার তৎকালীন সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং তার স্ত্রী দিপুর দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আমি খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু আজকে দিপুর ভাই পরিতোষকে জিজ্ঞেস করে জেনেছি তারা মাঝে মধ্যে জামকাপড় দেয়া ছাড়া কোন অর্থনৈতিক সহযোগিতা করেননি।
অর্থ ছাড়া দিপু খাবে কি? তার পড়ালেখার কি হবে? আলহামদুলিল্লাহ এই দিপু যতদিন প্রাপ্ত বয়স্ক না হবে ততদিন তার লেখাপড়া চলবে। আমরা এই পরিবারের সাথে প্রতিমাসে এসে হাজির হবো। ডা. শফিকুর রহমানের সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রতিমাসে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দিপুর পরিবারকে দেয়া হবে দেয়া হচ্ছে।
দিপুর ১৮ বছর বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সেই নৌকাডুবিতে ৭২ জনের প্রাণহানি হয়। এর মধ্যে ৭১ জনই ছিলেন সনাতন ধর্মের। ঘটনার তিনদিন পর জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাত করে সমবেদনা জানান এবং প্রত্যেক নিহতের জন্য ৩০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল আবারও পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাত করে আর্থিক সহযোগিতা সহায়তা প্রদান করেন।