ঢামেক চিকিৎসকদের সাফল্য, টেঁটা অপসারণে বাচঁলেন রোগী

- আপডেট সময় : ১১:৪৯:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
মুখমণ্ডলের হাড় ভেদ করে টেঁটার ফলা ঢুকে গেছে মস্তিষ্কের পাঁচ সেন্টিমিটার গভীরে। অবস্থান একেবারে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের প্রধান রক্তনালি ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারি থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে। রক্তনালিতে আঘাত হলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দাঁড়াতো শূন্যের কোঠায়। এমন বিপজ্জনকভাবে বিদ্ধ এক রোগীর মুখমণ্ডল থেকে সফলভাবে টেঁটা অপসারণ করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আজ বুধবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তার সফল অস্ত্রোপচারের তথ্য জানায়। আক্রান্ত রোগী মো. আশরাফুল (২৬) নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। সংঘর্ষে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
গত ১২ মার্চ ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিট প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমা ইশরাত জাহান রিফাতের নেতৃত্বে অত্যন্ত জটিল এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা অস্ত্রোপচারে আরও ছিলেন একই বিভাগের ডা. কাজী ইরফান সোবহান, ডা. গাজী হাবিবুল্লাহ, ডা. শুভ্র সাহা, ডা. হাসান, ডা. পুনম রায় এবং অ্যানেস্থিশিওলজিস্ট ডা. আল বিরুনী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১২ মার্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে এক ব্যক্তি টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিটে আসেন। তার ডান চোখের নিচ দিয়ে টেঁটার একটি ফলা প্রবেশ করে মুখমণ্ডলের হাড় এবং বায়ু কুঠুরি ভেদ করে মস্তিষ্কের মাস্টারগ্লান্ড পিটুইটারির ঠিক নিচে অবস্থান করছিল। সিটি স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের প্রধান রক্তনালি ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারি থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে এর অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই রক্তনালির ইনজুরিতে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকটা শূন্যের কোঠায় পৌঁছায়। এমন জটিল একটা পরিস্থিতিতে রোগীর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগ, অ্যানেস্থিশিয়া বিভাগ এবং চক্ষু বিভাগ রোগীটির অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এক ঘণ্টার চেষ্টায় কোনো রকমের মস্তিষ্ক, রক্তনালি কিংবা চোখের ইঞ্জুরি ছাড়াই সফলতার সঙ্গে অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন হয়। গতকাল মঙ্গলবার রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়।