ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামী শাসনে চলবে সিরিয়া, অস্থায়ী সংবিধানে সই করলেন প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক মিরর টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) একটি অস্থায়ী সংবিধানের খসড়া প্রস্তাবে সই করেছেন, যার মাধ্যমে দেশটি আগামী পাঁচ বছর ইসলামী শাসনের অধীনে চলবে। আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দ্রুত বিদ্রোহ শুরু করার পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতারা নতুন শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছেন।

 

শারার এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মধ্যে এক বৈঠকের পর অস্থায়ী সংবিধান ঘোষণা করা হয়। একে কেন্দ্র করে পুরনো সংবিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

 

অস্থায়ী সংবিধানের খসড়ার প্রক্রিয়া নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সদস্য আব্দুলহামিদ আল-আওয়াক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পূর্ববর্তী সংবিধানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা রক্ষা করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য মুসলিম হওয়ার শর্ত এবং আইনশাস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে ইসলামী আইন নির্ধারণ।

 

এই অস্থায়ী সংবিধানটির প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের রাজনৈতিক উত্তরণে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা। ডিসেম্বরে শারা জানিয়েছিলেন যে, সিরিয়ার সংবিধান পুনর্লিখনে তিন বছর এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

 

এদিকে, গত মাসে সিরিয়ায় একটি জাতীয় সংলাপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই সম্মেলনটি তাড়াহুড়ো করে আয়োজিত হয়েছিল এবং সিরিয়ার বিভিন্ন জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বা নাগরিক সমাজের পর্যাপ্ত অংশগ্রহণ ছিল না।

 

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫০ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পর নতুন শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা এখনও নতুন সরকারের প্রতি সন্দিহান। তবে, তুরস্কের মারদিন আর্তুকলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ আল-আওয়াক জানান, অস্থায়ী সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে, যা দেশের নড়বড়েও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে।

 

সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, শারা সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করেছেন, যার মধ্যে কুর্দি যোদ্ধাদের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ও রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইসলামী শাসনে চলবে সিরিয়া, অস্থায়ী সংবিধানে সই করলেন প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ০৪:৪৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) একটি অস্থায়ী সংবিধানের খসড়া প্রস্তাবে সই করেছেন, যার মাধ্যমে দেশটি আগামী পাঁচ বছর ইসলামী শাসনের অধীনে চলবে। আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দ্রুত বিদ্রোহ শুরু করার পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতারা নতুন শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছেন।

 

শারার এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মধ্যে এক বৈঠকের পর অস্থায়ী সংবিধান ঘোষণা করা হয়। একে কেন্দ্র করে পুরনো সংবিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

 

অস্থায়ী সংবিধানের খসড়ার প্রক্রিয়া নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সদস্য আব্দুলহামিদ আল-আওয়াক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পূর্ববর্তী সংবিধানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা রক্ষা করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য মুসলিম হওয়ার শর্ত এবং আইনশাস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে ইসলামী আইন নির্ধারণ।

 

এই অস্থায়ী সংবিধানটির প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের রাজনৈতিক উত্তরণে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা। ডিসেম্বরে শারা জানিয়েছিলেন যে, সিরিয়ার সংবিধান পুনর্লিখনে তিন বছর এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

 

এদিকে, গত মাসে সিরিয়ায় একটি জাতীয় সংলাপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই সম্মেলনটি তাড়াহুড়ো করে আয়োজিত হয়েছিল এবং সিরিয়ার বিভিন্ন জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বা নাগরিক সমাজের পর্যাপ্ত অংশগ্রহণ ছিল না।

 

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫০ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পর নতুন শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা এখনও নতুন সরকারের প্রতি সন্দিহান। তবে, তুরস্কের মারদিন আর্তুকলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ আল-আওয়াক জানান, অস্থায়ী সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে, যা দেশের নড়বড়েও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে।

 

সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, শারা সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করেছেন, যার মধ্যে কুর্দি যোদ্ধাদের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ও রয়েছে।