‘পাগলিটাও মা হয়েছে, বাবা হয়নি কেউ’

- আপডেট সময় : ১১:৩১:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
ফুটফুটে নিষ্পাপ কন্যাশিশুটি কোলে নিয়ে গাছের নিচে পাতা বিছানায় বসে আছেন মা। বুধবার রাতে শিশুটির জন্ম। শিশুটি জন্ম নিয়েছে কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার ৬ নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ঘোষঘর গ্রামের জব্বর আলী মুন্সীর বাড়িতে। মানসিক ভারসাম্য হারানো নারীর কোলে জন্ম নেওয়া নবজাতকের লালন-পালন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেউ ওই নারীর পরিচয় জানে না। তবে অনেকে তার নাম আকলিমা বলে জানান। তবে তা আসল নাম, নাকি এমনিতেই প্রচল হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নবজাতকের বাবার পরিচয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিন মাস আগে ঠিকানাবিহীন এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী বাজারে বসে বসে রাস্তার মাটি খাচ্ছিল। ওই বাজারে দানের কম্বল আনতে গিয়ে আয়শা বেগম নামে এক ভিক্ষুক ওই মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। মেয়েটি তার আশ্রয়দাতাকে মারধর করত, তারপরও কষ্ট করে মেয়েটির গর্ভপাত পর্যন্ত আশ্রয়ে রাখেন। আয়শা বেগম স্বামী পরিত্যক্তা, বাবার বাড়িতে একমাত্র পুত্র সন্তান নিয়ে আশ্রিত আছেন।
তার এক মাত্র ভাই নূর নবী(৩২)ও প্রতিবন্দী। নিজ পুত্র এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের ভরণ-পোষণও তার ভিক্ষাবৃত্তিতে চলে। ২২ দিন ধরে ভিক্ষুকের ঘরে আশ্রিত ৭ মাসের গর্ভবতী এক প্রতিবন্দী’ শিরোনামে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা পান ওই নারী। গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) স্থানীয় সাংবাদিকরা ওই প্রতিবন্ধীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসহ সার্বিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করে দেওয়া হলেও হাসপাতালে রাখা যায়নি।
আয়েশা বেগম জানান, পাগলী মেয়েটি তাকে প্রতিনিয়ত বিরক্ত করত। তাকে কিল, ঘুসি ও থাপ্পর দিত।
তিনি আরো জানান, পরিচয়হীন পাগলী মেয়েটি সুন্দর এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। সে মুখে কিছু বলতে পারে না, মানসিক প্রতিবন্দী, মাঝে মাঝে কাগজ কলম হাতে দিলে নিজের নাম ‘আকলিমা’ লিখতে পারে আর কিছুই পারে না। এখন তাকে ও নবজাতককে নিয়ে আমি বিপাকে আছি। আমি চাই সরকার তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করুক।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসনাত খান বলেন, আমি কর্মস্থলে যোগদানের আগে থেকেই উপজেলা প্রশাসন পাগলীর আশ্রয়দাতা আয়েশাকে সহযোগিতা করছে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বেওয়ারিশ পাগলীর কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার খবর পেয়েছি। প্রশাসনের পক্ষে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হবে।