মসজিদের ইমাম নিয়ে দ্বন্দ্ব, পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন!

- আপডেট সময় : ০৪:৩২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদের ইমাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন করা হয়েছে! শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়া ২৫ সেকেন্ডে একটি ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন বখাটে তরুণ ও যুবক মিলে কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনের জাতীয় পতাকার উত্তোলনের স্ট্যান্ডে জুতা বেঁধে টানিয়ে দিচ্ছেন ১০/১২ জন যুবক। এসময় তাদের অনেকের মুখে অশালীন স্লোগানও শোনা যায়। এই ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তৈরি হয় আলোচনা–সমালোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজের খুৎবার আগে মসজিদের মিম্বরে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন কলেজ এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন। তারা বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজ একটি স্বনামধন্য কলেজ। স্থানীয়দের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনো কাম্য নয়। কলেজ মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহকে সসম্মানে বিদায় করার পাশাপাশি বর্তমান ইমামকেও বাদ দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দিতে হবে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এমন একজনকে নিয়োগ দিতে হবে যাকে কলেজ ও মসজিদ এলাকার কেউ না চিনে। এ বিষয়ে আমরা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।
তবে স্থানীয়দের এই কথা মানেনি অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীদের একাংশ। তারা খুতবা চলাকালে বের হয়ে যান মসজিদ থেকে। নামাজ শেষ হতেই বাকিরা যুক্ত হোন তাদের সঙ্গে। এসময় কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মধ্যের স্ট্যান্ডে বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে জুতা ঝুঁলিয়ে দেয় ৮-১০ জন যুবকের একটি দল।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, এ কেমন কাজ। ইমাম গেলে ইমাম আসবে। দোষ করলে মানুষ করছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা করল কেন। কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
অভিযুক্ত ইমাম মারুফ বিল্লাহ সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কী ঘটনা করা করেছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁইয়া বলেন, ‘জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন, রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের সমান এবং ঘৃণিত কাজ ছিল এটি৷ এই কাজ কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেব এবং সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘আমার ধারণা অব্যাহতি দেওয়া মসজিদের সাবেক ইমাম মারুফ বিল্লাহর বহিরাগত অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কারণ এর আগেও তারই লোকজন কলেজ এবং মসজিদে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করেন। পুলিশ ভালোভাবে তদন্ত করলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পারবে।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবুও আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’