ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পাশে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ

- আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১০৮ বার পড়া হয়েছে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি তথ্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন ও আবাসনের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ।
তাদের এ কার্যক্রম ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ফটকের ডান পাশে ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বুথ স্থাপন করেছে সংগঠনটি। চট্টগ্রাম জেলার জবি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এ সংগঠনটি দূরদুরান্ত থেকে আসা ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করেছে।
এসময় শিক্ষার্থীদের তথ্য সহায়তা, টোকেনের মাধ্যমে বিনামূল্যে মোবাইল, ব্যাগ, মানিব্যাগ গচ্ছিত রাখা, বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন সরবরাহসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কাজ করছে এই সংগঠনটি। এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে আবাসন সুবিধাও প্রদান করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জানান, এ ধরনের উদ্যোগ তাদের পরীক্ষার চাপ সামলাতে সহায়তা করছে।
অনুপম বিশ্বাস নামে এক শিক্ষার্থীর কাছে ছাত্রকল্যাণ এর সহায়তা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জবির চট্টগ্রামের সিনিয়রদের কাজগুলো অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমারা চার বন্ধু গতকাল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এক সিনিয়র ভাইয়ের মেসে উঠেছি। সকালে ভাই আমাদের পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছে দেন।সিনিয়রদের এমন সহযোগিতায় আমাদের আসন খুঁজে পাওয়া ও আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য চিন্তা করতে হয়নি।’
চট্টগ্রাম থেকে আসা পরীক্ষার্থী আশিক বলেন, আমি প্রথমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছি, পরীক্ষার হল খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছিল। এই তথ্যকেন্দ্র থেকে সঠিক দিকনির্দেশনা পেয়ে সহজেই হল খুঁজে পেয়েছি। হুমায়ুন কবির নামে অভিভাবক বলেন, আমরা বাইরে থেকে সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। কিন্তু এখানে বিশ্রামের জায়গা ও অন্যান্য সুবিধা পেয়ে ভালো লাগছে।
চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সোহানা রহমান নামে আরেক পরীক্ষার্থী জানন, প্রচন্ড যানজটের কারণে আমার পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে কিছুটা দেরিতে হয়। জবির রোবার স্কাউটের এক ভাই আমাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কেন্দ্র পৌঁছে দেন। পরে জানতে পারি ভাইয়া আমার জেলার বড় ভাই।
চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বলেন, নিজ জেলা থেকে ভর্তি পরিক্ষা দিতে আসা আমাদের ছোট ভাই বোনদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা শুধু ভর্তি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম থেকে আগত শিক্ষার্থীদের নয় সারা দেশের যে কোন শিক্ষার্থী যারা আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসছে তাদের সকলকেই আমরা সহযোগিতা করছি। আমরা হেল্প ডেস্কে মূলত ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের তথ্যসেবা দিয়ে থাকি। এর পাশাপাশি হেল্প ডেস্কে আমরা মোবাইল, ঘড়ি, ব্যাগ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস যা পরীক্ষার হলে বহন করা যায় না, তা জমা রাখি। ঢাকার রাস্তার জ্যাম সম্পর্কে আমরা সবাই জানি সেজন্য আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ শিক্ষার্থী সার্বিক সহযোগিতায় সর্বদা বদ্ধপরিকর। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা আগত শিক্ষার্থীদের হলে ও মেসে থাকার ব্যবস্থা, তথ্য সহায়তা, ব্যাগ ও মোবাইল আমানত রাখাসহ যাবতীয় সহযোগিতা করছি।
এছাড়াও, পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের বিশ্রামের জন্য সীমিত সংখ্যক চেয়ার ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। আমরা অতীতেও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
প্রচার সম্পাদক আরাফাত চৌধুুরী নিলয় বলেন, আমারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আগত ভর্তি পরীক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে তথ্য সহায়তা বুথের ব্যবস্থা করেছি। সর্বোপরি তাদের যত ধরনের সহায়তা প্রয়োজন ছিল আমরা করার চেষ্টা করেছি। আমাদের কারণে শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট সাহস পেয়েছে।
ভবিষ্যতে এর চেয়েও উন্নতমানের সেবা প্রদান করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমাদের এসব উদ্যোগের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে পরীক্ষার্থীদের একটা ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।