ঢাকা ১১:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাকে রাস্তায় ফেলে যায় সন্তানরা, ৩ দিন পর ফুটপাতে মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক মিরর টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীর পল্টন থানার স্টেডিয়ামের তিন নম্বর গেটের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

 

এই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্টেডিয়াম এলাকার ‘পথের ইশকুল’ নামের একটি সংস্থার শিক্ষক সাকির ইব্রাহিম বলেন, ‘তিনদিন আগে অজ্ঞাতপরিচয় এই নারীকে বাবুল নামে এক ব্যক্তি স্টেডিয়ামের তিন নাম্বার গেটের পাশে রেখে যান। পরে আমি ওই নারীর কাছ থেকে জানতে পারি, অল্প বয়সেই তাঁর স্বামী মারা যায়। অনেক কষ্ট করে তিনি তাঁর দুই মেয়েকে মানুষ করেছেন। মেয়েদের বিয়ে হওয়ার পর তাদের সঙ্গেই ঢাকার লালমাটিয়ার বাসায় থাকতেন। রক্তচাপজনিত রোগে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর শরীর প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ত। অনেক সময় বিছানায় মলমূত্র ত্যাগ করতেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েদের জানায়, মাকে অন্য কোথাও রেখে আসতে। তা না হলে তাদেরও বাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে। এ ঘটনার পর ওই নারীকে স্টেডিয়াম এলাকায় ফেলে রেখে যায় বাবুল নামের এক ব্যক্তি।’

 

সাকির ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকবার ওই নারীর কাছে তাঁর নিজের এবং মেয়েদের নাম জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বারবারই উত্তর দেন– কী হবে এসব জেনে। পরে আজ দুপুরের দিকে পথ শিশুদের পড়াতে এসে দেখি ওই নারীটি অচেতন হয়ে পড়ে আছে রাস্তায়। আমরা বিষয়টি তখন পল্টন থানা পুলিশকে জানাই।’

 

এ বিষয়ে পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে আজ দুপুরের পর স্টেডিয়ামের তিন নম্বর গেটের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় অজ্ঞাতনামা ওই নারীকে উদ্ধার করি। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান ওই নারীটি আর বেঁচে নেই।’

 

এসআই আরিফ উল্লাহ আরও বলেন, ‘পথের ইশকুলের শিক্ষক সাকির ইব্রাহিম আমাদের ওই নারীর মর্মান্তিক বিষয়টি জানান। বিষয়টি সত্যিই খুব অমানবিক। সন্তানের কাছে মা কীভাবে অবহেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বিষয়টি ভাবতেই খুব অবাক লাগছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। আইনি প্রক্রিয়াও চলমান।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মাকে রাস্তায় ফেলে যায় সন্তানরা, ৩ দিন পর ফুটপাতে মৃত্যু

আপডেট সময় : ০১:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রাজধানীর পল্টন থানার স্টেডিয়ামের তিন নম্বর গেটের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

 

এই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্টেডিয়াম এলাকার ‘পথের ইশকুল’ নামের একটি সংস্থার শিক্ষক সাকির ইব্রাহিম বলেন, ‘তিনদিন আগে অজ্ঞাতপরিচয় এই নারীকে বাবুল নামে এক ব্যক্তি স্টেডিয়ামের তিন নাম্বার গেটের পাশে রেখে যান। পরে আমি ওই নারীর কাছ থেকে জানতে পারি, অল্প বয়সেই তাঁর স্বামী মারা যায়। অনেক কষ্ট করে তিনি তাঁর দুই মেয়েকে মানুষ করেছেন। মেয়েদের বিয়ে হওয়ার পর তাদের সঙ্গেই ঢাকার লালমাটিয়ার বাসায় থাকতেন। রক্তচাপজনিত রোগে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর শরীর প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ত। অনেক সময় বিছানায় মলমূত্র ত্যাগ করতেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েদের জানায়, মাকে অন্য কোথাও রেখে আসতে। তা না হলে তাদেরও বাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে। এ ঘটনার পর ওই নারীকে স্টেডিয়াম এলাকায় ফেলে রেখে যায় বাবুল নামের এক ব্যক্তি।’

 

সাকির ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকবার ওই নারীর কাছে তাঁর নিজের এবং মেয়েদের নাম জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বারবারই উত্তর দেন– কী হবে এসব জেনে। পরে আজ দুপুরের দিকে পথ শিশুদের পড়াতে এসে দেখি ওই নারীটি অচেতন হয়ে পড়ে আছে রাস্তায়। আমরা বিষয়টি তখন পল্টন থানা পুলিশকে জানাই।’

 

এ বিষয়ে পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে আজ দুপুরের পর স্টেডিয়ামের তিন নম্বর গেটের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় অজ্ঞাতনামা ওই নারীকে উদ্ধার করি। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান ওই নারীটি আর বেঁচে নেই।’

 

এসআই আরিফ উল্লাহ আরও বলেন, ‘পথের ইশকুলের শিক্ষক সাকির ইব্রাহিম আমাদের ওই নারীর মর্মান্তিক বিষয়টি জানান। বিষয়টি সত্যিই খুব অমানবিক। সন্তানের কাছে মা কীভাবে অবহেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বিষয়টি ভাবতেই খুব অবাক লাগছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। আইনি প্রক্রিয়াও চলমান।’